লেখক: ChatGPT
সকাল থেকেই আকাশে রোদ ঝলমলে। চারপাশে যেন এক উৎসবের আমেজ। আজ ঈদ—মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন।
গ্রামের প্রতিটি ঘরে চলছে রান্নাবান্নার ব্যস্ততা। কোথাও সেমাই ফুটছে, কোথাও খাসির মাংস। ছেলেমেয়েরা নতুন জামা পরে দৌড়ঝাঁপে ব্যস্ত।
কিন্তু রিফাতের চোখে সেই উজ্জ্বলতা নেই। সাত বছরের ছেলেটি মায়ের পাশে চুপচাপ বসে আছে। তার পুরোনো, একটু ছেঁড়া জামাটা আজও তার সঙ্গী।
"মা, আমি কি নতুন জামা পাবো না?"
মা চুপ করে থাকে। হাসে না, কাঁদেও না। মুখটা অন্যদিকে ফিরিয়ে ফেলে। তার মনের ভেতর যে ঝড় চলছে, তা রিফাত বুঝে না, তবে অনুভব করে।
বাবা মারা গেছেন দুই বছর আগে। তারপর থেকেই সংসারের ভার একাই টানছেন রিফাতের মা—জরিনা বেগম। মানুষদের বাসায় কাজ করে যা পান, তাতে শুধু পেট চলে, ঈদের আনন্দ কেনা যায় না।
ঈদের নামাজের সময় ঘনিয়ে আসে। সবাই সেজে-গুজে মসজিদের পথে। রিফাত একটু ইতস্তত করে, তারপর মায়ের পুরোনো জামাটা পরে নেয়। মা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, যেন ওই স্পর্শেই ঈদের আনন্দ উজাড় করে দেয়ার চেষ্টা।
রাস্তায় রাহাত ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়। রাহাত গ্রামের স্কুলশিক্ষক। সদা হাস্যোজ্জ্বল। রিফাতকে দেখে থেমে যায়।
"কিরে, নতুন জামা পরিসনি?"
রিফাত মাথা নিচু করে।
রাহাত ব্যাগ থেকে একটা ছোট প্যাকেট বের করে বলে, "এইটা তোর জন্য রেখেছিলাম। ঈদ মোবারক!"
রিফাত হতবাক। প্যাকেট খুলে দেখে—নতুন এক সেট পাঞ্জাবি আর টুপি! চোখে পানি চলে আসে তার।
"আমার জন্য?"
"হ্যাঁ তো! ঈদে সবাইকেই নতুন জামা লাগে, তাই না?"
রিফাত দৌড়ে বাড়ি যায়, জামা বদলায়। আয়নায় নিজেকে দেখে সে যেন নিজেকেই চিনতে পারে না। ঈদের নামাজে গিয়ে সে সবার সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়ায়। এবার তার চোখেও ঈদের আলো, হাসির রঙ।
ঈদের দিন শুধু নতুন জামা বা খাবারের নাম নয়। কখনো কখনো একটি ভালোবাসার স্পর্শই হয়ে ওঠে কারো ঈদের সবচেয়ে বড় উপহার।
📘 গল্পের বর্ণনা
"ঈদের দিন" একটি হৃদয়স্পর্শী ছোটগল্প, যেখানে ফুটে উঠেছে এক দরিদ্র শিশুর ঈদের দিনে আনন্দ পাওয়ার সংগ্রাম ও মানবিকতার জয়। ছোট্ট রিফাত, যার পরিবারের হাতে নতুন জামা কেনার সামর্থ্য নেই, ঈদের সকালেও পুরোনো জামা পরে। কিন্তু একজন সহানুভূতিশীল প্রতিবেশীর ভালোবাসা ও উপহারের মাধ্যমে তার ঈদ হয়ে ওঠে স্মরণীয়।
এই গল্পে ঈদের প্রকৃত অনুভূতি—ভ্রাতৃত্ব, সহানুভূতি ও ভালোবাসা—অত্যন্ত সহজ ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে। সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ ও ছোট একটি ভালো কাজের বড় প্রভাব কেমন হতে পারে, সেটাই এই গল্পের মূল বার্তা।